আত্মউন্নয়ন বাড়ানোর পন্থা বা উপায় আলোচনায় প্রথমে মনে রাখতে হবে, মন-নিয়ন্ত্রণ আত্ম-নিয়ন্ত্রণের প্রথম এবং প্রধান ধাপ। মনের বাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা গেলে, আত্মউন্নয়ন সহজ হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, সত্যিকারের আত্মবিশ্বাস মানুষকে দিতে পারে মানসিক শান্তি। বর্তমান পৃথিবীতে যে যতবেশি আত্মবিশ্বাসী, সে ততবেশি সফল।

আত্মউন্নয়ন বাড়ানোর পন্থা বা উপায়—

ভালো লাগার কাজ করা
এমন একটি কাজ খুঁজে বের করুন—যা করতে আপনি ভালোবাসেন। আপনি কোন কাজটি ভালো করতে পারেন, তা জানার মাধ্যমে নিজের মধ্যে সত্যিকারের আত্মবিশ্বাসের জন্ম হয়।

পরচর্চা না করা
কার ওজন বেড়েছে, কার ওজন কমেছে, কাকে দেখতে ভালো লাগে অথবা কাকে পচা লাগে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে সমালোচনা করা নিজের বা অন্যের ভাবমূর্তি বাড়ায় না।

সে-কারণে এই ধরনের আলোচনা বাদ দিয়ে কীভাবে মানুষ নিজেকে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলতে পারে—সেই দিকেই মনোযোগ দেওয়া উচিত।

সঠিক শরীরের মাপ বা চুলের কাট সুখী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নয়।

আত্মসমালোচনা বন্ধ করা
প্রত্যেকেই নিজেকে সবচেয়ে ভালো যাচাই করতে পারে, যেমন : নাক অনেক বড়, কপালে অনেক ভাঁজ পড়া অথবা শিশুদের সঙ্গে ঠিক কাজ করা হচ্ছে কিনা বা মিটিংয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা ইত্যাদি।

মানুষ নিজের মনের সঙ্গে যেভাবে কথা বলে, কখনোই বন্ধুবান্ধব বা ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে সেভাবে আলোচনা করা উচিত নয়। নিজের মাথা থেকে নেতিবাচক সমালোচনাগুলো বাদ দিয়ে কাজ করতে হবে।

নিজেকে ভালোবাসুন
নিজেকে সম্পূর্ণ ভালোবাসার মাধ্যমেই সত্যিকারের আত্মবিশ্বাসের জন্ম হয়। মিডিয়া এবং ফ্যাশন জগতের অনেক কিছু দেখে নিজেকে অযোগ্য মনে হতে পারে।

কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে কেউই নিখুঁত নয়, এমনকি জনপ্রিয় চিত্রতারকারাও। তাই নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হবে ও বাসতে হবে ভালো।

সামাজিক মিডিয়ার প্রভাব
অনলাইনে গিয়ে আপনার স্কুলের বন্ধুবান্ধবদের বর্তমান অবস্থা বা তাদের স্টাইল অথবা জীবনযাপনের ধরন যদি আপনার মাঝে হীনমন্যতার সৃষ্টি করে, তবে কয়েকদিনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে নিজেকে বিরত রাখুন এবং আপনি যে কাজে আনন্দ খুঁজে পান, তা করার চেষ্টা করুন।

শরীরচর্চা করা
অধিকাংশ মানুষই খেলাধুলা থেকে নিজেকে বিরত রাখেন। অনেকে মনে করেন পরে ব্যায়াম করবো। আবার এই পোশাকে মানাবে কিনা? তবে এই ধারণাগুলো সম্পূর্ণ মনের ব্যাপার।

এমন কাজ খুঁজে বের করা উচিত—যা আনন্দ দেয়, যেমন : সাঁতার কাটা, যোগ ব্যায়াম, জুম্বা, টেনিস খেলা, নাচ অথবা ক্যারাটে ইত্যাদি।

খেলাধুলা এবং শরীরচর্চার মাধ্যমে মনোবল অধিক পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।

অন্যকে সাহায্য করা
স্থানীয় হাসপাতাল পরিদর্শনের সময় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা, প্রতিবেশিদের কাজে সাহায্য করা, তাদের প্রতি সহযোগিতামূলক মনোভাব—ইত্যাদি মানসিক শান্তি দেয় এবং আতœবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করে।

অর্থাৎ অন্যকে সাহায্য করার মধ্য দিয়ে নিজেও উপকৃত হওয়া যায়।

ইতিবাচক চিন্তা
প্রতিদিন ভালোলাগার তিনটি বিষয়য়ের প্রতি মনযোগ দিন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটানা ২১ (একুশ) দিন কোনো কাজ করলে, তা মনের ভেতর পরিবর্তন আনে ও অভ্যাসে পরিণত হয়।

সে-কারণে টানা একুশ দিন কর্মক্ষেত্রের নেতিবাচক ও অপ্রিয় বিষয়গুলোকে বাদ দিয়ে আনন্দ দেয় এমন তিনটি বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দিতে দিন, তাহলে মনে দীর্ঘমেয়াদী আনন্দ পাওয়া সম্ভব।

সূত্র : রয়টার্স